ব্যথা মুক্ত কোলনস্কোপি
কোলনস্কপি একটি অত্যাধুনিক এবং সরাসরি দেখে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা যা দ্বারা পায়ুপথ, মলাশয়, পুরো বৃহদান্ত্র ও টার্মিনাল আইলিয়াম পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং এখানে কোন ঘা বা আলসার, টিউমার বা ক্যান্সার, পলিপ, রক্তপাত, কোন অংশ চেপে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় সরাসরি দেখে ছবি তুলে এনে রোগীর সামনে উপস্থাপন করা যায়।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নিরূপণ ছাড়াও উল্লেখিত অংশসমূহের অনেক রোগের সফল ও কার্যকরী চিকিৎসা প্রদান সম্ভব।
১. দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে।
২. পায়ুপথে রক্তপাত হলে।
৩. মল পরীক্ষায় OBT (Occult Blood Test) পজিটিভ হলে।
৪. দীর্ঘ মেয়াদী পাতলা পায়খানা কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে।
৫. IBS রোগ নির্ণয়ে।
৬. IBD (Ulcerative Colitis ও Crohn’s Disease) রোগ নিরূপণসহ চিকিৎসা কালীন ও চিকিৎসা উত্তর Assessment করতে।
৭. কোলন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে।
৮. এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ অন্যান্য পরীক্ষায় অস্বাভাবিকত্ব থাকলে।
৯. এই পরীক্ষার মাধ্যমে বৃহদান্ত্রের যে কোন অস্বাভাবিক গঠন, ক্ষত বা বিভিন্ন রোগ যেমন – পাইলস বা হিমোরয়েড, অ্যানাল ফিশার, পলিপ, টিউমার, ডাইভার্টিকুলাম, ইনফেকটিভ কোলাইটিস, ইন্টেসটাইনাল টিবি ইত্যাদি সনাক্ত করা সহ বেশ কিছু রোগের চিকিৎসা দেওয়া কার্যকরীভাবে সম্ভব।
১০. চিকিৎসার জন্য যেমন – পলিপ অপসারণ, রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করা, পাইলসের ব্যান্ড লাইগেশন, সংকুচিত নালীর প্রসারণ করা, FNAC কিংবা বায়োপসির জন্য টিস্যু সংগ্রহ ইত্যাদি।
১১. বৃহদান্ত্র থেকে অপ্রয়োজনীয় বাহ্যিক পদার্থের অপসারণ
(যেমন মাছের কাঁটা, মাংসের হাড়, মাংসপিণ্ড, মার্বেল, পয়সা, ব্যাটারি, বোতাম, নাকফুল, কানের দুল, কৃত্রিম দাংতের অংশবিশেষ, তারকাটা, পিন, হিজাবের পিন ইত্যাদি)
১২. আলসার টিউমার বা ক্যান্সার থেকে FNAC কিংবা বায়োপসির জন্য টিস্যু নেয়া।
১৩. পলিপ অপসারণ।
১৪. রক্তপাত বন্ধে অ্যাড্রেনালিন ইনজেকশন দেয়া।
অত্যাধুনিক ব্যথা মুক্ত পানি ও কেপ পদ্ধতিতে কোলনস্কোপি কি?
এটি কোলনস্কোপির একটি সর্বাধুনিক পদ্ধতি যাতে যন্ত্রটির নলের মাথায় একটি স্বচ্ছ
আবরণ (Cap) পরানো হয় এবং অন্ত্রের ভেতরে পূর্বে ব্যবহৃত কার্বন ডাই অক্সাইড/
বাতাসের পরিবর্তে পানির প্রবাহ দেয়া হয়। এতে রোগী ব্যথ্যা অনেক কম অনুভব
করেন, তাই বেদনানাশক ওষুধ ও কম দিতে হয় । পানির প্রবাহের কারণে ছবির গুণগতমান অনেক বেড়ে যায় এবং পলিপ বা অন্য অস্বাভাবিকতা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয় । এইপদ্ধতিতে ঝুঁকি একেবারেই কম। এতে রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় না। রোগীমনিটরে নিজেই তার সম্পূর্ন কোলনস্কোপি দেখতে পারেন। কোলনস্কোপির পরিক্ষারপরেই রোগী সাভাবিক অবস্থায় বাসায় যেতে পারেন।