ই আর সি পি (ERCP) এর মাধ্যমে পিত্তনালী এর পাথর অপসারণ।
Dr.Masfique Ahmed Bhuiyan FCPS
ERCP ইআরসিপি এর এব্রিবিয়েশান মানে বড় নাম হচ্ছে এন্ডস্কপিক রেট্রোগ্রেড কোলানজিও পেনক্রিয়াটোগ্রাফি।
ERCP ইআরসিপি এক ধরনের অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এর মাধ্যমে লিভার,পিত্তথলি,পিত্তনালী ও প্যানক্রিয়াস এর বিভিন্ন জটিল রোগের সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা করা হয়।
ERCP ইআরসিপি -অত্যাধুনিক X-ray মেশিন এবং বিশেষ এন্ডস্কোপ এর মাধ্যমে করা হয়। ERCP ইআরসিপি এন্ডস্কোপ সাধারন এন্ডোস্কপ থেকে আলাদা, এ ধরনের এন্ডস্কোপ সাধারণত মোটা হয় এবং এর ক্যামেরা বিশেষ ভাবে স্হাপিত যেন খাদ্য নালীর ডিওডেনামে এ গিয়ে পিত্তনালী ও খাদ্যনালীর সংযোগস্হল দেখা যায়।
এ বিশেষ ধরনের স্কোপ (ডিওডেনস্কোপ) মুখের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে ইসোফেগাস ও স্টোমাক পেরিয়ে ক্ষুদ্র তন্ত্রের প্রথম অংশ পর্যন্ত পৌঁছানো হয়।তারপর পার্শ্ব ক্যামেরার মাধ্যমে পিত্তনালী ও ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশের সংযোগ স্থল দেখা হয়।
উক্ত সংযোগ স্থল কে পেরিএম্পোলারি ওরিফিস বলে।এই পেরিএম্পোলারি ওরিফিস দিয়ে আরো চিকন তারের ন্যায় অতি সূক্ষ যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে পিত্তনালীতে পৌঁছানো হয়।
পিত্তনালীতে বিশেষ ধরনের ডাই এবং বিশেষ ধরনের এক্সে মেসিন যাকে সি-আর্ম বলে, এ দুটো ব্যাবহার করে পিত্তনালী শুকিয়ে যাওয়া,পিত্তনালীর পাথর এবং পিত্তনালীর ক্যান্সার সনাক্তকরণ করা হয়ে থাকে।
আইআরসি কেন করা হয়ঃ-
সার্জিক্যাল জন্ডিস এর চিকিৎসা পদ্ধতি।
সার্জিক্যাল জন্ডিস এর কারন গুলো হচ্ছে
পিত্তনালীতে পাথর হওয়া
পিত্তনালী শুকিয়ে যাওয়া
পিত্তনালী তে ক্যান্সার হওয়া
সার্জারীর পূর্ববর্তি প্রস্ততি হিসেবে রোগীর জন্ডিস কমাতে পিত্তনালীতে নল ঢুকানো বা স্ট্যান্টিং।
ইআরসিপি করার আগে যা করনীয়ঃ
ইআরসিপি ERCP করার জন্য সম্মতি পত্রে স্বাক্ষর।
প্রসেডিউর করার অন্তত আট ০৮ ঘন্টা পূর্বে খাবার ও পানি পান বন্ধ করতে হবে।
যে ধরনের ঔষধ প্রসিডিউর পূর্ববতী বন্ধ করতে হবে ঃ
এসপিরিন
ইবোপ্রোফেন
রক্ত পাতলা করার ঔষধ।
হার্টের ভাল্বের রোগ থাকলে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়।
বিশেষ ধরনের এনেস্থিসিয়া দিয়ে ইআরসিপি করা হয়ে থাকে।
ইআরসিপি ERCP এর ঠিক পূর্বের প্রস্ততিঃ
ERCP ইআরসিপি করার পূর্বে হাতের চুড়ি, কানের দুল,নাকের দুল,হাতের ঘড়ি, লোহার বা পিতলের তাবিজ, বাতের বেল্ট খোলে রাখবেন।
স্বাভাবিক কাপড় ছেড়ে হাসপাতালের নির্দিষ্ট গাউন পড়তে হবে।
সাধারনত বাম হাতে ক্যানুলা করা হয়ে থাকে।
নলের মাধ্যমে নাক দিয়ে অক্সিজেন দেয়া হয়।
মুখে একটি স্প্রে দেয়া হয়।
বাম পাশে কাত হয়ে, উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে হয়।একটি মুখের গার্ড পড়িয়ে দেয়া হয়।
এনেস্থিসিয়া এর ডাক্তার ঔষধের মাধ্যমে ঘুম পাড়িয়ে দিবে।
তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে মুখের ভিতর দিয়ে ERCP স্কোপ খাদ্য নালীতে প্রবেশ করানো হয়।
পাকস্থলী অতিক্রম করে চিকন খাদ্যনালীতে পৌছান হয়ে থাকে।
চিকন খাদ্যনালীর শুরুর অংশ কে ডিওডেনাম বলা হয়।
ডিওডেনাম এর দ্বিতীয় অংশে পিত্তনালীর মুখ রয়েছে।
পিত্তনালীর মুখ দিয়ে পিত্তনালীতে রং প্রবেশ করিয়ে সি আর্ম নামক বিশেষ ধরনের এক্সরে মেশিন এর মাধ্যমে পিত্তনালী এর পাথর, টিউমার ও পিত্তনালী শুকিয়ে যাওয়া সনাক্তকরণ করা হয়ে থাকে ।
তার পর বিশেষ ধরনের যন্ত্রের মাধ্যমে পিত্তনালী এর পাথর অপসারণ করা হয়ে থাকে।
ক্যান্সার হয়ে থাকলে স্ট্যান্টিং করা হয়ে থাকে।
পিত্তনালী শুকিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নালী প্রসারিত করা হয়ে থাকে।